জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা গার্ডেন এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) অভিযান চালিয়ে এক এমবিবিএস চিকিৎসক এবং তার সহযোগীকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ডা. নাফিস সাদিক এবং জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদককারবারি মো. সাজাহান।
ডিএনসির মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সেগুনবাগিচায় সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১১ নভেম্বর ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদের নির্দেশনায় পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি বিশেষ রেইডিং টিম বসিলা গার্ডেন সিটির শান্তা টাওয়ারে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডা. নাফিস সাদিক এবং মো. সাজাহান।
মহাপরিচালক জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডা. নাফিস প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে পরে তিনি নিজেই পড়ার টেবিলের ড্রয়ার থেকে ৫০ পিস ইয়াবা বের করেন। এছাড়া তার সহযোগীর দেহ তল্লাশি করে আরও এক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
ডিএনসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত ফ্ল্যাটে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসক নাফিস সাদিক কতদিন ধরে এ কাজে জড়িত ছিলেন এবং তার সঙ্গে আর কারা যুক্ত ছিলেন, তা যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
মহাপরিচালক মো. হাসান মারুফ জানান, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে এবং ধাপে ধাপে তদন্ত চলছে। উদ্ধারকৃত ইয়াবার উৎস, তার প্রভাবশালী মাদক চক্রে সম্পর্ক এবং সম্ভাব্য ক্রেতা চেইন নির্ধারণে ডিএনসি অতিরিক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই অভিযান দেশের রাজধানীতে মাদক নির্মূলের ক্ষেত্রে যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা নির্দেশ করছে। অভিযান থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পেশাগত পরিচয় থাকা ব্যক্তিরাও মাদক চক্রে জড়িয়ে পড়তে পারে এবং এই ধরনের অপরাধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, ডিএনসি নিয়মিত নজরদারি বৃদ্ধি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পিত রেইড চালিয়ে মাদক পাচার ও সরবরাহ চক্র বন্ধ করতে কাজ করছে।
উদ্ধারকৃত ইয়াবা ও গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ডিএনসি আশা করছে, দ্রুত তদন্ত শেষ করে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে এবং মাদক প্রতিরোধে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।