1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে শাবানার দীর্ঘ ও প্রভাবশালী পথচলা অল্প সময়ে অভিনয়ে পরিচিতি গড়ে তুলেছেন তটিনী সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ে ৩০০ অনুসন্ধান কমিটি গঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ডিএসসু নেতাদের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানায় চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাংলা ভাষাভিত্তিক এআই প্ল্যাটফর্ম ‘কাগজ ডট এআই’ ও নতুন বাংলা ফন্ট ‘জুলাই’ উদ্বোধন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অনুকূল পরিবেশের কথা জানালেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সুদানে হামলায় নিহত ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী: শোক প্রকাশ নৌপরিবহন উপদেষ্টার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সাজা বাড়াতে প্রসিকিউশনের আপিল ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবকে বাংলাদেশের দীর্ঘ গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতা হিসেবে উল্লেখ করলেন মাহফুজ আলম

মানবদেহে অঙ্গ সংযোজনের নতুন অধ্যাদেশ গেজেট আকারে প্রকাশ

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩১ বার দেখা হয়েছে

জাতীয় ডেস্ক

মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন ও প্রতিস্থাপন কার্যক্রমকে আধুনিক ও আইনানুগ কাঠামোর মধ্যে আনার লক্ষ্য নিয়ে সরকার ‘মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। বুধবার জারিকৃত এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের বিদ্যমান আইন রহিত করে অঙ্গ সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং ব্যবহার পদ্ধতি নতুনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, মানবদেহে অঙ্গসংযোজন ও প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত পূর্ববর্তী আইনের বিধান বর্তমান সময়ের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের সম্ভাবনা রোধ এবং অবৈধ পাচার প্রতিরোধে পূর্বের আইন বাতিল করে একটি যুগোপযোগী অধ্যাদেশ প্রণয়ন প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নতুন অধ্যাদেশ জারি করেন।

অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু হয় গত ১৭ জুলাই, যখন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ৩৪তম বৈঠকে খসড়াটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড, বিদ্যমান অবকাঠামো, রোগীর নিরাপত্তা এবং অঙ্গ দানের নৈতিক দিকগুলো পর্যালোচনা করে নতুন কাঠামো প্রণয়নের যুক্তি তুলে ধরা হয়।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, দেশে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত রোগী, দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্যক্তি এবং কর্ণিয়া প্রতিস্থাপন প্রয়োজন এমন রোগীর সংখ্যার প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান আইন দীর্ঘদিন ধরে হালনাগাদ হয়নি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নীতিমালা সংশোধন করাটাই ছিল এই অধ্যাদেশ প্রণয়নের অন্যতম উদ্দেশ্য।

নতুন অধ্যাদেশে অঙ্গ দাতার পরিসর প্রসারিত করা হয়েছে। পূর্ববর্তী আইনে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়—যেমন বাবা, মা, ভাইবোন—অঙ্গ প্রদান করতে পারলেও দূরসম্পর্কীয় আত্মীয়দের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা ছিল। সংশোধিত কাঠামোয় ভাতিজা, ভাগিনা প্রভৃতি নিকট আত্মীয়দেরও অঙ্গ দাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা চিকিৎসকের জন্য বেশি বিকল্প সৃষ্টি করবে এবং রোগীদের চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগও বাড়াবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অঙ্গ দানের পরিধি বাড়ানোর ফলে প্রতিস্থাপনের সময় রোগীর সঙ্গে উপযুক্ত দাতার জেনেটিক মিলের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পাবে।

অধ্যাদেশে অঙ্গ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ওপর কঠোর তদারকি এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার নির্দেশনা যুক্ত করা হয়েছে। অঙ্গ প্রতিস্থাপন-সংক্রান্ত সব কার্যক্রম নির্দিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্রে পরিচালিত হবে এবং প্রতিটি ধাপের জন্য পৃথক অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এতে চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি বাড়বে এবং অঙ্গ ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া অঙ্গ প্রতিস্থাপনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক বা আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়েছে। অঙ্গ কেনাবেচার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। মানবদেহের অঙ্গকে বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা রোধে অধ্যাদেশটি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে।

স্বাস্থ্যখাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন আইন কার্যকর হলে দেশে কিডনি, লিভার, কর্ণিয়া ও অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে বিদেশমুখী চিকিৎসা নির্ভরতা কমতে পারে এবং দেশীয় হাসপাতালগুলো অঙ্গ প্রতিস্থাপন সেবা আরও উন্নতভাবে প্রদান করতে পারবে। দীর্ঘদিন ধরে যে রোগীরা প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশ যাত্রা, ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়ার কারণে সমস্যায় ছিলেন, তাদের জন্য এই অধ্যাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সহায়তা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরকারি সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অধ্যাদেশ কার্যকর হওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত বিধিমালা, হাসপাতালের নিবন্ধন পদ্ধতি, বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্রের মানদণ্ড এবং তদারকি কাঠামো প্রণয়নে কাজ শুরু করবে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ, সচেতনতা কার্যক্রম এবং অঙ্গ দান সম্পর্কে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে পৃথক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে দেশে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রটি আরও সুসংহত, নিরাপদ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে সরকার নীতিগত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, আইনটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে রোগীদের চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ বাড়বে এবং দেশের চিকিৎসাব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে যুক্ত হবে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com