আইন আদালত ডেস্ক
চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জন নিহত হওয়া ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ বিজিবির লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চার আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ শুনানির কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ দিন পলাতক দুই আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগের বিষয়টিও আলোচনা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ৫ নভেম্বর এ মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে তা স্থগিত হয়ে আজকের দিন ধার্য করা হয়। ২৬ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেল এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। বিচারিক প্যানেলের অপর সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বর্তমানে চার আসামির মধ্যে দুজন কারাগারে রয়েছেন। রেদোয়ানুল ইসলাম ছাড়াও অন্য কারাগারে থাকা আসামি হলেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম। গত ২২ অক্টোবর তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং শুনানি শেষে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
পলাতক দুই আসামি হলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান। তাদের উপস্থিতি না থাকায় আদালত স্টেট ডিফেন্স নিযুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
জুলাই-আগস্ট ২০২৩ সালে ছাত্র ও সাধারণ জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীসহ দেশজুড়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। রামপুরায় এ সময় ২৮ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন। এই হত্যাযজ্ঞে রামপুরার বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলাম সরাসরি গুলি ছুড়তে দেখা গিয়েছিলেন। এছাড়া অন্যরা নেতৃত্ব দেন এই হত্যাযজ্ঞে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালে চার আসামির বিরুদ্ধে পৃথকভাবে ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। তদন্ত সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। মামলার শুনানি ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, এটি দেশের ইতিহাসে মানবতাবিরোধী অপরাধ দণ্ড সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিচারিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।