1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ফেরারি আসামি শেখ হাসিনার লকারে ৮৩২ ভরি সোনা উদ্ধারের তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১১ বার দেখা হয়েছে

আইন আদালত ডেস্ক

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও বর্তমানে ফেরারি অবস্থায় থাকা শেখ হাসিনার নামে রাজধানীতে সংরক্ষিত একাধিক ব্যাংক লকার জব্দ ও তল্লাশি করে ৮৩২ ভরি সোনার অলঙ্কারসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ উদ্ধার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইসি। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর দিলকুশায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় লকার খোলার পর এই বিপুল পরিমাণ সোনা পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, শেখ হাসিনার নামে থাকা দুটি পৃথক লকার জব্দ করার পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সেগুলোর তালা ভেঙে পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনা করে সিআইসি। লকার খোলার সময় নিরাপত্তা, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ, এনবিআর ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্ধার হওয়া সোনার পরিমাণ ও প্রকৃতি যাচাই করতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষাও করা হচ্ছে। জব্দকৃত সম্পদের আনুমানিক মূল্য নির্ধারণের কাজ চলছে।

একই দিন পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল এলাকার একটি শাখায় শেখ হাসিনার নামে থাকা আরেকটি লকারও খোলা হয়। তবে ওই লকারে কোনো মূল্যবান সম্পদ পাওয়া যায়নি। কর্মকর্তাদের ভাষ্য, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ফেরারি অবস্থায় থাকা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সর্বস্ব বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই সব লকার ও ব্যাংক হিসাব তল্লাশি করা হচ্ছে।

এর আগে গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। একই রায়ে দুইজনের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় মালিকানায় বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়। আদালতের রায় কার্যকর করার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো পরবর্তীতে সম্পত্তি অনুসন্ধান, জব্দ ও তালিকাভুক্তির কার্যক্রম শুরু করে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয়। এর ধারাবাহিকতায় সিআইসি দেশের বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় শিক্ষক হাসিনার নামে থাকা লকার, হিসাব ও সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে। তদন্তের প্রাথমিক ধাপেই তার নামে থাকা একাধিক ব্যাংক হিসাব ও লকারের তথ্য পাওয়া যায়।

গত ১০ সেপ্টেম্বর সিআইসি রাজধানীর সেনা কল্যাণ ভবনে অবস্থিত পূবালী ব্যাংকের মতিঝিল করপোরেট শাখায় অভিযান চালিয়ে ১২৮ নম্বর লকার জব্দ করে। ওই সময় ব্যাংকের দুটি হিসাবও সিআইসি জব্দ করে, যার একটিতে ১২ লাখ টাকার এফডিআর এবং অন্যটিতে ৪৪ লাখ টাকা পাওয়া যায়। জব্দের পর উভয় হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়। সেই অভিযানের পরপরই সিআইসি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করে শেখ হাসিনার নামে অতিরিক্ত লকারের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়।

পরবর্তীতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে আরও দুটি লকার—৭৫১ ও ৭৫৩ নম্বর—চিহ্নিত করে সিআইসি। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী লকারগুলোর তালিকা প্রস্তুত, পুনঃনিরীক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর জব্দকৃত লকারগুলো মঙ্গলবার খোলা হয় এবং সেখান থেকেই ৮৩২ ভরি সোনার অলঙ্কার উদ্ধার করা হয়। কর্মকর্তাদের মতে, এ ধরনের লকার জব্দ ও তল্লাশি কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পদের মালিকানা রাষ্ট্রের পক্ষে আইনসম্মতভাবে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চালানো হবে।

এনবিআর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার আগে যাচাই-বাছাই, মূল্যায়ন ও নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এসব সম্পদের উৎস, সময়কাল, সংগ্রহের পদ্ধতি এবং আইনি মালিকানা সম্পর্কেও তদন্ত চলছে। একাধিক সংস্থার সমন্বয়ে পরিচালিত এই তদন্ত ভবিষ্যতে আরও লুক্কায়িত সম্পদের সন্ধান দিতে পারে বলে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।

আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালতের দেওয়া বাজেয়াপ্তের আদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে এই ধরনের অনুসন্ধান ও জব্দ অভিযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে আসা না গেলে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে। এছাড়াও, এসব সম্পদ রাষ্ট্রীয় খাতে যুক্ত হলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান নিশ্চিত করা সহজ হবে।

তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, লকার জব্দ ও তল্লাশি ছাড়াও শেখ হাসিনার নামে থাকা অন্যান্য সম্পদ—যেমন জমি, বিনিয়োগ, আর্থিক দলিল বা সম্ভাব্য বিদেশি সম্পত্তি—সম্পর্কেও অনুসন্ধান চলছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং তা পর্যায়ক্রমে আদালতে দাখিল করা হবে। ভবিষ্যতেও প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন লকার বা ব্যাংক হিসাবের তথ্য পাওয়া গেলে সেগুলোর ব্যাপারেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন কর্মকর্তারা।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com