জেলা প্রতিনিধি
ফরিদপুরে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ফরিদপুরের সভাপতি শেখ ফয়েজ আহম্মেদ (৪৮)কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর শহরের আলীপুর এলাকায় তাকে আটক করা হয় এবং পরে কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার বাসিন্দা শেখ মানিকের ছেলে শেখ ফয়েজ ফরিদপুর সমবায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর তিনি চলতি নভেম্বর শহরে ফিরে আসেন এবং স্থানীয় কয়েকটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।
স্থানীয় ছাত্রনেতাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ফরিদপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শেখ ফয়েজ সরাসরি আন্দোলনের বিরোধিতা করেন এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় অংশ নেন। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব সোহেল রানা বলেন, “শেখ ফয়েজ জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন। তাকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল জানান, “কোতয়ালী থানা পুলিশ দীর্ঘদিন তাকে খুঁজছিল। বুধবার সন্ধ্যার পর আলীপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
শেখ ফয়েজের গ্রেপ্তারের পর স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফরিদপুরে জুলাই আন্দোলন মামলার অন্যান্য পলাতক আসামিদের শনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা জোরদার করা হচ্ছে। আদালত-সংক্রান্ত সূত্রে জানা যায়, মামলাটির তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত আদালত বিভিন্ন সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছে।
ফরিদপুরে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ওই সময় শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণ সরকারের নীতি ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালায়। আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও হামলার ঘটনায় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা জড়িত ছিল।
শেখ ফয়েজের গ্রেপ্তারের ফলে মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া আরও কার্যকরভাবে এগোতে পারে বলে আইনজীবী এবং বিচারিক সূত্র থেকে জানা গেছে। গ্রেপ্তারের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি মামলার অন্যান্য তদন্তকাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে।
স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের গ্রেপ্তারি অভিযান স্থানীয় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে এটি বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও দ্রুততার প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করতে সহায়ক হিসেবে দেখা হচ্ছে।