নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার মিরপুর মডেল থানার আদালত আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য। এটি মামলার ১২২তম দাখিলের তারিখ পেছানোর ঘটনা।
আজ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল, তবে তদন্ত সংস্থা নির্ধারিত সময়মতো প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম নতুন দিন ধার্য করেন। মিরপুর মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া করা বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি— মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরবর্তীতে রুনির ভাই নওশের আলম শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত পরিচালনার দায়িত্ব ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে র্যাব থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গঠিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সকে দেওয়া হয়। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, তদন্ত শেষে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে। তবে ইতোমধ্যে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায়, তদন্তকারী সংস্থা সময় বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ৯ মাসের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।
গত ২২ এপ্রিল শুনানিতে আদালত ৬ মাস সময় মঞ্জুর করেন এবং পরবর্তী আদেশের জন্য ২২ অক্টোবর নতুন দিন নির্ধারণ করেন। তবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি।
এরপর, ২৩ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার তদন্ত শেষ করতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সকে আরও ৬ মাস সময় প্রদান করে। আদালত ও হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে টাস্কফোর্স বিভিন্ন সরকারি এজেন্সির অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় মামলার কার্যক্রমে আরও বিলম্ব ঘটেছে।
এই হত্যাকাণ্ড এবং দীর্ঘদিনে স্থগিত থাকা তদন্ত দেশের সাংবাদিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংস্থার মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মামলার যথাযথ ও দ্রুত তদন্ত সুনিশ্চিত করতে আদালত এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোতে চাপ বাড়ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আদালতের নির্ধারিত ৫ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের তারিখই মামলার অগ্রগতি নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তদন্ত সংস্থাগুলো খুনের পেছনের কারণ ও সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করতে নানা ধরনের সাক্ষ্য, তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহে মনোযোগ দিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং সাংবাদিক স্বাধীনতার ওপর প্রভাব সম্পর্কেও সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বারোপ করেছেন।
মামলার সুষ্ঠু বিচার ও তদন্তের অগ্রগতি নিরীক্ষণ করতে আদালত নিয়মিত শুনানি চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া হাইকোর্টের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে প্রতিবেদন দাখিলের সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।