আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন সিনেটে ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (এনডিএএ) বিলটি বুধবার ৭৭-২০ ভোটে অনুমোদিত হয়েছে। এর আগে প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস করা হয়। এখন এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে। বিলের আওতায় কংগ্রেসের নজরদারির ব্যবস্থাসহ প্রশাসনের অগ্রাধিকারগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বিল অনুযায়ী, ইউরোপে মার্কিন সেনার সংখ্যা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে একাধিক সীমার নিচে নামানো যাবে না। ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ ব্যতীত এবং যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত ছাড়া ইউরোপে সেনা সংখ্যা ৭৬ হাজারের নিচে নামানো যাবে না। বর্তমানে ইউরোপে প্রায় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। একইভাবে, দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনা সংখ্যা ২৮,৫০০-এর নিচে নামানো যাবে না।
কংগ্রেস ইউক্রেনকে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং ইউক্রেন সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স ইনিশিয়েটিভের আওতায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে। এই অর্থ আগামী দুই বছরে সমানভাবে বিতরণ করা হবে। এছাড়া ইউক্রেনে অস্ত্র উৎপাদনের জন্য বছরে ৪০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ইউরোপীয় নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করেছে।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক প্রভাব মোকাবিলায়, তাইওয়ান সিকিউরিটি কো-অপারেশন ইনিশিয়েটিভের জন্য ১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে। বিলটি ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই অঞ্চলের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে।
ইসরায়েলের নিরাপত্তা সহায়তার জন্য ৬০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এতে আয়রন ডোমসহ যৌথ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কর্মসূচির জন্য অর্থায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কংগ্রেসে এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বিদলীয় সমর্থন রয়েছে।
এনডিএএ মার্কিন সামরিক কার্যক্রমের রিপোর্টিং বাধ্যবাধকতা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে চোরাচালান ও মানবপাচার সন্দেহে পরিচালিত হামলার বিবরণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে কংগ্রেসে উপস্থাপন করতে হবে। ভেনেজুয়েলার আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাদক পাচারের অভিযোগে পরিচালিত মার্কিন হামলার ভিডিও ফুটেজ সরবরাহের বিষয়েও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
বিলটি ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধ এবং ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের অনুমোদন বাতিল করেছে। উভয় দলের সমর্থকরা মনে করছেন, এটি ভবিষ্যতে কংগ্রেসের অনুমোদন ব্যতীত সামরিক অভিযান পরিচালনার ঝুঁকি কমাবে। এছাড়া, সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনামলে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়ক হতে পারে।