নিজস্ব প্রতিবেদক
ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন সম্পন্ন করার পর সর্বনিম্ন সাত ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাবেন বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান শেষে সফটওয়্যারভিত্তিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনআইডি নম্বর তৈরি হবে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ গ্রহণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক তথ্য গ্রহণের পর এনআইডি তৈরি হতে সাধারণত সাত ঘণ্টা থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগে। তবে নির্দিষ্ট করে ঠিক কত সময় লাগবে, তা আগাম বলা সম্ভব নয়।
হুমায়ুন কবির বলেন, কারো ক্ষেত্রে পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টার মধ্যেই এনআইডি তৈরি হতে পারে, আবার কারো ক্ষেত্রে ১০ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সফটওয়্যারনির্ভর হওয়ায় এতে কোনো মানবিক হস্তক্ষেপ নেই। সিস্টেমে প্রয়োজনীয় যাচাই শেষ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এনআইডি নম্বর স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেট হয় এবং এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত করা হয়।
তিনি আরও জানান, তারেক রহমানের বায়োমেট্রিক তথ্য গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে। যে কক্ষে তিনি ছবি ও আঙুলের ছাপ দেবেন, সেই কক্ষও প্রস্তুত করা হয়েছে। কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান এবং তার কন্যা জায়মা রহমান ইতোমধ্যে ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করেছেন। তারা ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের অন্তর্গত গুলশান এলাকার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হবেন। অনলাইন আবেদন যাচাইয়ের পর বায়োমেট্রিক তথ্য গ্রহণের ধাপে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সাধারণত অনলাইন ফরম পূরণ, তথ্য যাচাই, ছবি তোলা এবং আঙুলের ছাপ গ্রহণ—এই কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। এসব ধাপ শেষে কেন্দ্রীয় সার্ভারে তথ্য সংরক্ষণ করা হয় এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এনআইডি নম্বর তৈরি হয়। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ প্রক্রিয়াটি সব নাগরিকের জন্য একই নিয়মে পরিচালিত হয়।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল ঘোষণার পর ২২ ডিসেম্বর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সেদিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফেরার পর ভোটার হিসেবে নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২৭ ডিসেম্বর তারেক রহমানের বায়োমেট্রিক তথ্য গ্রহণের বিষয়টি সামনে আসে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তাই যেকোনো নাগরিকের ক্ষেত্রে এনআইডি প্রদানের সময় নির্ধারিত নিয়ম ও প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। তারেক রহমানের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হবে না। সব ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তার এনআইডি প্রস্তুত হয়ে যাবে।
এদিকে ভোটার তালিকায় নতুন করে অন্তর্ভুক্তির এই প্রক্রিয়াকে নির্বাচন কমিশনের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই কমিশনের মূল লক্ষ্য। সে লক্ষ্যেই জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।