আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আফ্রিকার দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসো যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। দেশ দুটির এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিসা নিষেধাজ্ঞার জবাবে।

মালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মালিয়ান নাগরিকদের জন্য যে ধরনের ভিসা শর্ত ও প্রক্রিয়া আরোপ করা হয়েছে, মালিতে মার্কিন নাগরিকদের জন্যও একই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হবে। মন্ত্রণালয় উল্লেখ করেছে, এই পদক্ষেপটি পারস্পরিক সমতার নীতির ভিত্তিতে এবং অবিলম্বে কার্যকর করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

তদ্রূপ, বুরকিনা ফাসোও ‘সমতুল্য ভিসা ব্যবস্থা’ চালু করেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিময়ের নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের একই ধরনের নিয়মের মধ্যে আনার মাধ্যমে পারস্পরিক সমতা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

গত ১৬ ডিসেম্বর ট্রাম্প ফিলিস্তিনসহ সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, এই পদক্ষেপগুলি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য নেওয়া হয়েছে।

মালিতে ট্রাম্পের ঘোষণার প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দেশের কিছু অঞ্চলে অবাধে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বুরকিনা ফাসোর ক্ষেত্রে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, দেশটিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা অব্যাহত রয়েছে, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবস্থান করা এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে দেশের অনীহার বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে।

উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে এখন পর্যন্ত মোট ১৯টি দেশ ও ফিলিস্তিন এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। ট্রাম্প তার পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্সির সময়ও অনুরূপ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।

নাইজারের পাশাপাশি মালি ও বুরকিনা ফাসোও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছে। এই তিন দেশ ‘অ্যালায়েন্স অব সাহেল স্টেটস’ নামক একটি নতুন জোটের মাধ্যমে কাজ করছে। দেশগুলো সামরিক নেতাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। মালিতে ইতোমধ্যেই প্রায় দেড় হাজার ওয়াগনার ভাড়াটে সেনা এবং ক্রেমলিন-নিয়ন্ত্রিত আধাসামরিক বাহিনী ‘আফ্রিকা কর্পস’-এর প্রায় এক হাজার যোদ্ধা অবস্থান করছে।

সম্প্রতি মালির বামাকোতে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ সম্মেলনে এই তিন দেশ সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌথ সামরিক ব্যাটালিয়ন চালুর ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং আল-কায়েদা ও আইএসআইএস-এর সঙ্গে যুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলার ফলে দেশগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করতে বেগ পেতে হচ্ছে।