বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা: লাখো মানুষের উপস্থিতিতে শেষ শ্রদ্ধা প্রদান
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
দৈনিক প্রতিবেদক, ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা আজ (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকা শহরে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়। দীর্ঘ এক মাসের বেশি চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া।
আজ বিকেল ৩টায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত নামাজে জানাজায় অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক জানাজার ইমামতি করেন।
জনস্রোত এবং মানুষের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে খালেদা জিয়ার বিদায়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জানাজায় জাতি তাকে সবচেয়ে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিয়েছিল। আজ বেগম খালেদা জিয়াকে দেওয়া হলো এক ঐতিহাসিক বিদায়।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-সংসদ ভবন দক্ষিণ প্লাজা থেকে সোবহানবাগ, কারওয়ান বাজার ও বিজয় সরণি হয়ে শ্যামলী পর্যন্ত চলমান জনস্রোত বাংলাদেশের মানুষের কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। এই জনস্রোত এমন সম্মান প্রদর্শনের সুযোগ সবসময় মানুষের ভাগ্যে জোটে না।
জানাজার সময় উপস্থিত দর্শক ও অংশগ্রহণকারীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শেষ শ্রদ্ধা জানান। নামাজে জানাজার প্রার্থনায় অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দ এবং কূটনীতিকরা। সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন প্রশাসনিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল যাতে জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরটি দেশের রাজনীতিতে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। তার রাজনৈতিক জীবন ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানুষ ভিড় করেছেন, যা বাংলাদেশে তার প্রভাব ও জনপ্রিয়তার প্রতিফলন হিসেবে দেখা যাচ্ছে। জনস্রোত এবং জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতি দেশজুড়ে খালেদা জিয়ার প্রতি মানুষের কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছে।
রাজনীতিবিদ এবং সামাজিক ব্যক্তিত্বরা খালেদা জিয়ার মৃত্যুকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার রাজনৈতিক যাত্রা এবং দেশের প্রতি অবদান বিবেচনায়, এই বিদায় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে ইতিহাসে সংরক্ষিত হবে।
সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, জানাজার আয়োজনের সময় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এবং আশপাশের এলাকা থেকে গণপরিবহন এবং যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়, যাতে উপস্থিত জনসাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিনের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার রাজনৈতিক জীবন, সরকারের নেতৃত্ব এবং দেশনেতৃত্বের ক্ষেত্রে অবদান দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকবে।