স্বাস্থ্য ডেস্ক
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১১৪৭ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার (৩ নভেম্বর) অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত এক দিনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সর্বাধিক ২৮৪ জন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১৪৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঢাকার সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৬৬ জন রোগী।
রাজধানীর বাইরে বিভাগভিত্তিক হিসাবে বরিশালে ১৩২ জন, চট্টগ্রামে ৯৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৫৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৬৫ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৭০ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ১৯ জন এবং সিলেট বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৯ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এদিকে, একই সময়ে সারা দেশে ১০৪২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট ৬৯ হাজার ৪৫২ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সারাদেশে মোট ৭২ হাজার ৮২২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৮৮ জন।
পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় চলতি বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা এখনও উদ্বেগজনক বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের।
এর আগে ২০২৩ সালে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ। ওই বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লেও অক্টোবর-নভেম্বর মাসে তা কমার প্রবণতা দেখা যায়। তবে আবহাওয়ার অনিশ্চয়তা ও শহরাঞ্চলে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ঘাটতির কারণে এ সময়ে সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকে একযোগে কাজ করতে হবে। আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস, বাড়িঘর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।