আবহাওয়া ডেস্ক
মালাক্কা প্রণালী ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে গভীর নিম্নচাপ এবং পরে ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’-এ পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার সকাল ৬টায় এ অবস্থান পাওয়া গেছে এবং এটি পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মালাক্কা প্রণালী এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি অবস্থান করায় সমুদ্রসীমার নিকটবর্তী অঞ্চলে উচ্চসুর্য্য ঢেউ এবং শক্তিশালী বাতাসের প্রভাব পড়তে পারে। মৎস্যজীবী, নৌ-পরিবহন ও উপকূলীয় এলাকায় জনসাধারণকে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ ও শক্তি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর নিয়মিত তথ্য প্রচার করছে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন শ্রীলঙ্কা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত আরেকটি লঘুচাপও ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে রূপান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই লঘুচাপের প্রভাব হিসেবে সমুদ্রসীমায় বায়ুচাপের পরিবর্তন এবং বাতাসের বেগ বৃদ্ধি পেতে পারে।
এদিকে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চচাপের এই অবস্থান আংশিকভাবে নিম্নচাপগুলোর গতিপথ এবং ঘূর্ণিঝড়ের ঘণত্ব প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষত, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টি এবং বাতাসের অবস্থায় পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’-এর ঘণত্ব বৃদ্ধি এবং লঘুচাপের ক্রমবর্ধমান অবস্থার কারণে উপকূলীয় এলাকায় নৌপরিবহন, মৎস্যজীবী কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সতর্কতার সঙ্গে পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে বলেছে, ক্ষুদ্র নৌকা ও মাছধরা নৌকা কেবল আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে যাত্রা শুরু না করুক।
এছাড়া, ঘূর্ণিঝড় ও লঘুচাপের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং বাতাসের দিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা উপকূলীয় এলাকায় বন্যা বা পানিবদ্ধতা ঘটাতে পারে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
অবসরপ্রাপ্ত বা পর্যবেক্ষণরত মৎস্যজীবী এবং উপকূলীয় জনগণকে নিয়মিত আবহাওয়ার তথ্য খোঁজার পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে স্থানান্তরের প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ও লঘুচাপের গতিপথের উপর নজর রাখার জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তর বিভিন্ন রেডিও, টেলিভিশন এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তথ্য সরবরাহ করছে।
পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করছেন, মালাক্কা প্রণালী ও বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত এই আবহাওয়াগত উপাদানগুলো উপমহাদেশীয় জলবায়ু ও বাতাসের গতিপথে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘সেনিয়ার’ এবং সুস্পষ্ট লঘুচাপের গতিপথ পরিবর্তন পরিস্থিতিকে আরও প্রভাবিত করতে পারে।