নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৃহস্পতিবার রাজধানীর ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়েতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে দেশে ফেরার পর তার বক্তব্যে দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার, শান্তি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান জানান।
এর আগে, তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-২০২ ফ্লাইটে সিলেটে পৌঁছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রাজধানীতে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বহু জাতীয় নেতৃবৃন্দ।
তারেক রহমান সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বলেন, “আজ আমি রাব্বুল আলামিনের দরবারে কৃতজ্ঞতা জানাই, আপনাদের দোয়ায় আমি আমার প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছি।” তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ৭৫-এর ৭ নভেম্বর বিপ্লব, এবং ১৯৯০ সালের স্বৈরাচ্যবিরোধী আন্দোলনের উল্লেখ করে বলেন, “৭১ সালে যেমন স্বাধীনতা অর্জন হয়েছিল, তেমনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টও জনগণ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিরোধ জানিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তাদের কথা বলার অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার এবং যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার প্রত্যাশা করছে। দেশের বিভিন্ন ধর্ম, শ্রেণি ও অঞ্চলভিত্তিক মানুষকে সমানভাবে অন্তর্ভুক্ত করে একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান।
তারেক রহমান দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী, চার কোটি তরুণ, পাঁচ কোটি শিশু এবং কৃষক-শ্রমিকসহ প্রতিবন্ধী মানুষের অগ্রাধিকার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হই, আমাদের লক্ষ্য কোটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব।”
তিনি ২৪-এর আন্দোলনে নিহত ওসমান হাদিসহ সকল শহীদদের স্মরণ করেন এবং বলেন, “এদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দেবেন এবং গণতান্ত্রিক ভিত্তিতে দেশকে গড়ে তুলবেন।”
তারেক রহমান দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুত্বকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমাদেরকে উসকানির মুখে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। দেশে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। শিশু, নারী, পুরুষ—সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, হিন্দুসহ সকল ধর্মের মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের প্রতিজ্ঞা করতে হবে, যেকোনো মূল্যে দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা হবে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা পরিহার করতে হবে।”
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তারেক রহমান দেশের উন্নয়ন, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, “আমি ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল, ফর মাই কান্ট্রি’ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সহযোগিতা চাই। আল্লাহর সাহায্য ও দয়া থাকলে আমরা প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার মায়ের সুস্থতার জন্যও দেশবাসীর দোয়ার আবেদন করেন। তিনি বলেন, “আমার মায়ের সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করুন, যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশের জন্য।”
শেষে তিনি দেশের জনগণকে আহ্বান জানান, “আজ আসুন সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করি, ধৈর্যশীল ও শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করব। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করব এবং প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলব।” তার বক্তব্যে বারবার দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র, শান্তি ও জনগণের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিফলিত হয়।