1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
কক্সবাজারে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের পর জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হল আদানির অভিযোগে বিপিডিবির এলসি নবায়নে ব্যর্থতা, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে উদ্বেগ বিটিআরসিতে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও পদোন্নতি: শ্বেতপত্রে চিহ্নিত ৩৮ কর্মকর্তার মধ্যে পদোন্নতির প্রস্তুতি জোরদার জামায়াত–এনসিপি আসন সমঝোতা: বিভেদ, দরকষাকষি ও জোটের চূড়ান্ত রূপরেখা লাস ক্রুসেসে গুলিবিদ্ধ হয়ে ডেসিরে মার্টিন নিহত শহীদ ওসমান হাদি হত্যা মামলার দ্রুত বিচারের দাবিতে শাহবাগে গণ-অবস্থান, দেশজুড়ে অবরোধ স্বর্ণের দামে টানা সপ্তমবার বৃদ্ধিতে নতুন রেকর্ড দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসায় বিস্ফোরণ , উদ্ধার বোমা তৈরির সরঞ্জাম চাঁপাইনবাবগঞ্জে তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে কুপিয়ে গুরুতর জখম, জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অভিযোগ—”রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে চায় না”

জামায়াত–এনসিপি আসন সমঝোতা: বিভেদ, দরকষাকষি ও জোটের চূড়ান্ত রূপরেখা

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ — ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জোটগত ও আসনভিত্তিক সমীকরণ ক্রমেই স্পষ্ট রূপ নিচ্ছে। বহুল আলোচিত জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টির (এনসিপি) মধ্যে আসন সমঝোতা ও সম্ভাব্য জোট গঠন নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনা আজ রোববার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আজই এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

এনসিপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, রাজনৈতিক সংস্কার, সাংগঠনিক কৌশল এবং নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কার্যকর অবস্থান নিশ্চিত করতেই এই সমঝোতা। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব এ সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থান নিয়েছে এবং কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ আপত্তি সত্ত্বেও সমঝোতাকে চূড়ান্ত ধরে এগোচ্ছে। অপরদিকে, জামায়াত নেতৃত্বও বৃহত্তর ইসলামী ও সংস্কারপন্থী রাজনৈতিক মেরুকরণে এনসিপিকে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছে।

এনসিপি সূত্র জানায়, সমঝোতার অংশ হিসেবে দলটি কমপক্ষে ৫০টি আসন দাবি করেছিল। তবে দরকষাকষি ও জোটগত সমীকরণের ভিত্তিতে শেষ পর্যন্ত ৪০টি আসনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে দলটি প্রথম ধাপে ১২৫টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও সমঝোতা কার্যকর হলে বাকি আসনগুলোতে মনোনয়ন না দিয়ে জোটের হয়ে কাজ করবে। নেতারা মনে করছেন, ৮ দলীয় সম্ভাব্য এই সংস্কার জোটে এনসিপি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাবে।

এনসিপির নির্বাহী সদস্যদের একাংশ গতকাল রাতে সম্ভাব্য জোটের রূপরেখা নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে ৪০টি আসন ছাড়াও জোটের মুখপাত্র হিসেবে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব সামনে রাখা হয়। দলের এক নির্বাহী সদস্য জানান, “সবকিছু চূড়ান্ত হলে আজই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।”

যদিও দলের বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা এই সমঝোতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তবু কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন সদস্য এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আনুষ্ঠানিক আপত্তি জানিয়েছেন। ২১৬ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে ১৮৪ জন নেতা জামায়াতের সঙ্গে জোটের পক্ষে মত দিয়েছেন। আপত্তি জানানো ৩০ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে ২ জন তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করেছেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে জোট ঘোষণার আগেই দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা পদত্যাগ করেছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঢাকা–৯ আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে চট্টগ্রাম–১৬ আসনের প্রার্থী মীর আরশাদুল হকও পদত্যাগ করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এনসিপি সূত্র বলছে, আপত্তিকারী ৩০ জনের মধ্যে আরও কয়েকজন পদত্যাগ করতে পারেন, যাদের মধ্যে নারী নেতৃত্বের প্রতিনিধিও রয়েছেন।

আপত্তিকারী নেতাদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “জামায়াতের ১৯৭১ সালের ভূমিকা, গণহত্যায় সহযোগিতা ও স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা এবং এনসিপির মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।” তারা আরও উল্লেখ করেন, “আগে নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। মনোনয়নপত্র বিক্রি ও প্রার্থী ঘোষণা শেষে অল্প কিছু আসনের জন্য জোটে যাওয়া জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ।”

তবে এনসিপির আরেক অংশ পাল্টা চিঠিতে সমঝোতার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। চিঠিতে তারা বলেন, “গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের স্থায়িত্ব এবং জনমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর লক্ষ্যকে সামনে রেখে নির্বাচনী সমঝোতা সময়োপযোগী কৌশল।” তারা নির্বাহী কাউন্সিল ও আহ্বায়ক–সদস্য সচিবের গৃহীত যে কোনো সমঝোতা সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদিন শিশির বলেন, “আসন সমঝোতা চূড়ান্ত। শিগগিরই ঘোষণা আসবে। জুলাইয়ের শক্তি—এনসিপি, জামায়াতসহ ৮ দল এক হলে সরকার গঠন সম্ভব।” একই সুরে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও মুখ্য সমন্বয়ক আখতার হোসেনও জোটকে ‘সংস্কারকেন্দ্রিক ঐকমত্যের’ ফল বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এনসিপির অঙ্গসংগঠন জাতীয় যুব শক্তি, শ্রমিক শক্তি ও ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র শক্তি ইতোমধ্যে নাহিদ ইসলাম ও আখতার হোসেনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি ও পোস্ট প্রকাশ করেছে।

জামায়াত সূত্র জানায়, দলটি ১৫০ থেকে ২০০টির বেশি আসনে সরাসরি প্রার্থী দেবে এবং জোট কার্যকর হলে এনসিপি, এবি পার্টি ও অন্যান্য ইসলামী দলসহ মিত্রদের জন্য বাকি আসন ছেড়ে দেবে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান জানান, “৮ দলীয় জোটে নতুন শক্তি যুক্ত হচ্ছে। এনসিপিসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত।”

নির্বাচনের আগে এই জোটগত মেরুকরণ বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। তবে জোট গঠনের প্রক্রিয়া যত দ্রুত এগোচ্ছে, অভ্যন্তরীণ মতভেদ, ঐতিহাসিক বিতর্ক ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নও ততই গুরুত্ব পাচ্ছে। আজকের ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই সমঝোতা ও জোট রাজনীতির আনুষ্ঠানিক অধ্যায়ে প্রবেশ করতে পারে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com