1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
তারেক রহমানের পূর্ণাঙ্গ ভাষণ: গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান বিএনপি নতুন গণতন্ত্র যাত্রায় উদ্দীপনা পাচ্ছে তারেক রহমানের আগমন দেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ধাপ তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন: হাসনাত আব্দুল্লাহ মনোনয়ন না পেলে আগেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত দলের হাইকমান্ডকে জানিয়েছি : রুমিন ফারহানা তারেক রহমান এভারকেয়ার হাসপাতালে, চিকিৎসাধীন মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ কালীগঞ্জে ট্রেন দুর্ঘটনায় তিন নারী নিহত ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’: তারেক রহমান আল্লাহই ক্ষমতা ও সম্মানের অধিকারী : তারেক রহমান

সম্পদের হিসাব দেননি ৯৫% সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১০৫ বার দেখা হয়েছে

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য পাঁচ বছর পরপর সম্পদের হিসাব দেওয়ার নিয়ম করা হয়েছে ৪২ বছর আগে। কিন্তু কেউ সেই নিয়ম মানেন না। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রায় ছয় মাস আগে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্পদের হিসাব দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ৩১ ডিসেম্বর দাখিলের সময় শেষ হলেও ৯৫ শতাংশ কর্মীই এখনো হিসাব দেননি। অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা জানেন না, সম্পদের হিসাব দিতে হবে।

জনপ্রশাসনসচিব কে এম আলী আজম বলছেন, নির্দেশনার পরেও সম্পদের হিসাব না দিলে অসদাচরণের অভিযোগে সরকারি চাকরিজীবীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হতে পারে। এ ছাড়া সম্পদের হিসাব না দেওয়ার কারণে কেউ কোনো জটিলতায় পড়লে, সেই দায়ও তাঁর। তবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, অনিয়ম-দুর্নীতি চিহ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সম্পদের হিসাব দিতে অনীহা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পালনেও অনীহা
সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময় বাধ্যতামূলকভাবে সম্পদের হিসাব জমা দিতে হয়। ১৯৭৯ সালে জারি হওয়া সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের সম্পদ বিবরণী দাখিল এবং স্থাবর সম্পত্তি অর্জন বা বিক্রির অনুমতি নেওয়ার নিয়ম করা হয়। কেউ এই নিয়ম না মানায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিধিমালার ১১, ১২ ও ১৩ বিধি কর্মকর্তাদের অনুসরণের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন। এরপর গত ২৪ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে বিধিমালা বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে এর অগ্রগতি জানাতে বলে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পদের হিসাব দাখিলের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সম্পদের হিসাব জমা দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছিল, তা সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ের কেউ এখনো সম্পদের হিসাব জমা দেননি।’ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সম্পদের হিসাব দিয়েছেন কি না, তা জানেন না এই মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখার অতিরিক্ত সচিব শাহ আলম। অথচ প্রশাসন শাখায় সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার কথা। একজন কর্মকর্তা জানান, এই মন্ত্রণালয়ের কেউ এখনো সম্পদের হিসাব দেয়নি।

ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) গাজীউদ্দিন মোহাম্মদ মুনীর বলেন, ‘কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে—এ বিষয়টি আমার জানা নেই।’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সব মন্ত্রণালয়কে তাগাদাপত্র দেওয়ার বিষয়টি জানানোর পর তিনি বলেন, ‘তাহলে একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। এই মন্ত্রণালয়ের কেউ সম্পদের হিসাব দেননি।’

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) লায়লা জেসমিন বলেন, তাঁদের মন্ত্রণালয়ের কেউ এখনো সম্পদের হিসাব জমা দেননি। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কিছু হিসাব জমা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মিজান উল আলম বলেন, কেউ সম্পদের হিসাব দিয়েছেন কি না, তা তিনি জানেন না। প্রশাসন শাখার উপসচিব মোহাম্মদ গোলাম আজম জানান, তাঁদের শাখার কেউ সম্পদের হিসাব জমা দেননি।

মন্ত্রণালয়ের কতজন কর্মকর্তা সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন, সেই প্রশ্ন শুনেই আর কথা বলেননি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এস এম সেলিম রেজা। আবার একই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’ এই মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা জানান, এখনো কেউ সম্পদের হিসাব দেননি। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অধিশাখা) হাসনা জাহান খানম জানান, তাঁদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নির্ধারিত ফরম্যাটে সম্পদের হিসেব বিবরণী জমা দিচ্ছেন। কতজন এই হিসাব জমা দিয়েছেন, তা জানাতে না পারলেও হাসনা বলেন, এখনো সবার হিসাব পাওয়া যায়নি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি চাকরিতে ঢোকার সময় বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে সম্পদের হিসাব দাখিল করতে হয়। চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর যাঁরা নিয়মকানুন মানেন, তাঁরা পাঁচ বছর পরপর সম্পদের হিসাব দিচ্ছেন। এত দিন আসলে আয়কর জমা দেওয়ার একটা কপি তাঁরা জমা দিতেন।

আলী আজম বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে কতজন সম্পদের হিসাব দেননি, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তা দেখা হবে। আমরা একটি গ্রাফ করে যাঁরা হিসাব দেননি, তাঁদের সেখানে চিহ্নিত করব। কেউ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পদের হিসাব না দিলে সেই দায়দায়িত্ব তাঁর। এটাকে আমরা অভ্যাসে আনার চেষ্টা করছি। এটা যদি কেউ না দেয় এবং পরবর্তী সময়ে সম্পদের হেরফেরের কারণে মামলা বা বিভাগীয় ব্যবস্থার মধ্যে পড়েন, সেই দায়ও তাঁর, সেখানে আমাদের কোনো দায় থাকবে না।’

অনিয়ম-দুর্নীতি চিহ্নিত হওয়ার ভয়
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এ ছাড়া বিধিমালাতেই এটি বলা আছে। এরপরেও মানা হয় না। কারণ, এটা করা হলে অনিয়ম-দুর্নীতি চিহ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় তাঁরা সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছেন। বিষয়টি নির্দেশনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে, কারণ যাঁরা নিয়ম মানছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে—এমন কোনো দৃষ্টান্তও নেই। শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে দৃষ্টান্ত থাকলে অধীনেরা সেটা অনুসরণ করতেন, সেটাও তো নেই। আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া আর সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করা এক জিনিস নয়। নাগরিক হিসেবে আয়কর দিতে হয়, আর জবাবদিহির স্বার্থে সম্পদের হিসাব দিতে হয়।

সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন কোনো নির্দেশ দেন প্রজাতন্ত্রের সব কর্মচারীকে তা অনুসরণ করতে হবে। তার চেয়ে বড় কথা এটি বিধিতে আছে। ফলে সম্পদের হিসাব না দেওয়া বা অনীহা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। কেউ হিসাব না দিলে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। ফলে কেউ হিসাব না দিলে ঝুঁকিতে পড়বেন। এই ঝুঁকিটা না নেওয়াই ভালো।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com