পটুয়াখালীর একটি আদালত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণ অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের কন্যাকে ধর্ষণের ঘটনায় তিন আসামিকে দণ্ডিত করেছে। এ মামলায় আসামি সিফাত ও সাকিবকে ১৩ বছর এবং ইমরান মুন্সিকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টায় পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার সারমিন এই রায় প্রদান করেন। বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন, এই ধর্ষণের ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্তরা অপরাধে জড়িত ছিল এবং তাদের শাস্তি রাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী দেয়া হয়েছে।
মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, মামলার বিচার কার্য শুরু হওয়ার আগে আসামিদের শিশু হিসেবে দেখানো হয়েছিল। তবে আদালত সন্তুষ্ট হওয়ার পর, নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ৩ ধারায় আসামিদের ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি পর্ণোগ্রাফি আইনের ৮ এর ৭ ধারায় সাকিব ও সিফাতকে আরও ৩ বছর করে অতিরিক্ত শাস্তি দেয়, ফলে তাদের মোট ১৩ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে শহীদ পরিবারের কন্যা নিজের বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন শহীদের কন্যা, এবং ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ (২২ অক্টোবর) রায় ঘোষণা করা হয়। নিহতের পরিবার, আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ এই রায়কে সন্তোষজনক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা এই রায়ের মাধ্যমে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, এই রায়ের মাধ্যমে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার গুরুত্ব আরও একবার সামনে এসেছে। আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের মামলায় দ্রুত বিচার কার্যক্রম এবং ন্যায়বিচারের বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ।