প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এক সংলাপে বলেছেন, একটি সফল নির্বাচন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা সবচেয়ে বড়। তিনি উল্লেখ করেছেন, দলগুলো আন্তরিকভাবে কাজ করলে নির্বাচন কমিশনকে অতিরিক্ত চাপ নিতে হয় না।
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনি আচরণবিধি প্রতিপালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তিনি প্রত্যাশা প্রকাশ করেন যে সব রাজনৈতিক দল এ আচরণবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি এবং তার প্রধান শর্ত হলো নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলা।
তিনি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করেন। তাঁর মতে, সব দল নিজেদের কর্মীদের মাধ্যমে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য উৎসাহিত করবে, যা নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সিইসি জানান, শপথ গ্রহণের পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলমান থাকলেও, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের (ইআরএসসি) কাজের কারণে পূর্ণাঙ্গ সংলাপ শুরু করতে কিছুটা সময় লেগেছে। তিনি বলেন, গত বছরের ২৪ নভেম্বর শপথ গ্রহণের পর থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হলেও, কমিশনের কার্যক্রম চলার সময় এবং জাতীয় নেতাদের ব্যস্ততার কারণে সমান্তরাল আলোচনার সুযোগ সীমিত ছিল। কমিশনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরই এই সংলাপের পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
সিইসি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন নয়, সব রাজনৈতিক দলও জাতির কাছে একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সকলেই জাতির কাছে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতার নিশ্চয়তার অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংস্থার লিখিত মতামত পর্যালোচনা করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সিইসির মতে, আচরণবিধি প্রস্তুত করাটাই মূল কাজ নয়; বরং সেটি কার্যকরভাবে অনুসরণ করাটাই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও জানান, গত ১০-১৫ বছরে ভোটারদের মধ্যে এক ধরণের ভোট-বিমুখতা সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে তিনি জাতীয় নেতাদের এবং সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করা যায় এবং নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
সিইসি সমন্বিতভাবে বলেন, “কীভাবে আমরা সবাই মিলে রাজনৈতিক দল, দেশের ভোটার এবং নির্বাচন কমিশন আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করে একটি সুন্দর নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারি—এই লক্ষ্যেই আমরা একসঙ্গে কাজ করব।”