রাজনীতি ডেস্ক
ঢাকা, শনিবার, ২৯ নভেম্বর: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১৫ বছরে যারা লুটপাট, চুরি এবং ব্যাংক ডাকাতি করেছেন, তাদের দায়িত্বশীলভাবে শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়া উচিত। তবে তিনি প্রশ্ন তোলেন, লুটপাটকারীদের কারণে যে শিল্প ও কারখানাগুলো বন্ধ হয়েছে, তার ফলে যে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ বেকার হয়ে গেছেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারকে পরিকল্পনা করা জরুরি। তিনি বলেন, এই বেকারত্ব সৃষ্টি না করে কারখানাগুলো পুনরায় চালু করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই সরকারের মূল দায়িত্ব।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ২০২৫’-এ এই মন্তব্য করেন ফখরুল ইসলাম। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল, যা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত। ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান সাহেব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কম কথা বলতেন, বেশি কাজ করতেন। তিনি একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে দেশকে নিয়ে আসেন এবং ক্লোজ ইকোনমিকে ওপেন ইকোনমিতে রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, অতীতের প্রতিটি সময়ে বিএনপি যখন ক্ষমতায় এসেছে, তখন দেশের অর্থনীতিকে উন্নয়নের পথ প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সাধারণ জনগণ, কৃষক এবং শ্রমিকদের কল্যাণে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা বিএনপির প্রাধান্য ছিল। তিনি বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা এবং অর্থনীতির মাইক্রো ও ম্যাক্রো অবকাঠামোর স্থিতিশীলতা রক্ষা করা দলের মূল লক্ষ্য।
ফখরুল ইসলাম শিল্প ও ব্যবসায় খাতে সরকারের মনোভাব পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রতি আস্থা রাখা না হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটার পর দেশকে পুনরায় উন্নয়নের পথে আনতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলেন।
মহাসচিব কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য কার্যকর সমর্থন এবং অবকাঠামো সরবরাহের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কৃষকদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সার, বীজ এবং সেচ সঠিকভাবে পৌঁছানো প্রয়োজন। এছাড়াও, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি ইতোমধ্যেই এই খাতগুলিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ভাবনা করছে।
ফখরুলের বক্তব্যে শিল্প-কারখানা পুনরায় চালু করার প্রয়োজনীয়তা, বেকারত্ব হ্রাস, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক নীতি ও ব্যবসায়ী আস্থা পুনঃস্থাপনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিএনপি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দিক নির্দেশনা প্রদান করছে।