খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় সামান্য উন্নতি, বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় সামান্য উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার (২৯ নভেম্বর) তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা ফজলে এলাহি আকবর জানান, খালেদা জিয়ার অবস্থা গতকালের তুলনায় কিছুটা ভাল, তবে বর্তমানে তিনি এমন শারীরিক অবস্থায় নেই যে বিদেশে নেওয়া যায়। তিনি বলেন, শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হলে তার বিদেশে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনও নিশ্চিত করেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলে তাকে লন্ডনে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এবং তার চিকিৎসা পরিচালিত হচ্ছে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে।
মাহদী আমিন জানান, লন্ডন থেকে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী চিকিৎসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমান মেডিক্যাল বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে দেশের এবং বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছেন। চিকিৎসার প্রতিটি ধাপের তদারকি করছেন তারেক রহমান, যাতে কোনো বিলম্ব বা সীমাবদ্ধতা না থাকে।
হাসপাতালে নেত্রীর শারীরিক অবস্থার খবর নেওয়ার জন্য প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ভিড় করছেন, তবে ইনফেকশনের ঝুঁকির কারণে সিসিইউতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। মাহদী আমিন বলেন, নেত্রীর কাছ থেকে দূর থেকেই মানুষ তাদের ভালোবাসা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। সেই হাসপাতালে এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যাদের তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের শুরুতে চার মাস চিকিৎসা নিয়ে খালেদা জিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি লাভ করেছিলেন। এছাড়া একটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসজ্জিত এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবস্থার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে, যাতে তার নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় যাত্রা নিশ্চিত করা যায়।
মাহদী আমিন বলেন, দেশবাসীর দোয়া ও ভালোবাসায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। আধুনিক চিকিৎসার পর তিনি আবার দেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করবেন, নেতৃত্ব দেবেন এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত এই পদক্ষেপগুলো সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নেত্রীর বিদেশে নেওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তার পুনর্বাসন আরও দ্রুততর হবে। আগামী কয়েকদিনে তার শারীরিক অবস্থা কেমন উন্নতি হয়, তা গুরুত্বপূর্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি রাজনৈতিক মহলে এবং বিএনপির পার্টি পর্যায়ে বিশেষ মনোযোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। নেত্রীর স্বাভাবিক জীবন ও চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে তারেক রহমান এবং পারিবারিক সদস্যরা নিয়মিতভাবে মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছেন।
এবারের চিকিৎসা পরিকল্পনায় মূলত তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে—প্রথম, শারীরিক উন্নতি; দ্বিতীয়, বিদেশে যাতায়াতের নিরাপদ ব্যবস্থা; এবং তৃতীয়, পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য রক্ষণাবেক্ষণ। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে নেত্রীর চিকিৎসা প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত এবং সুচারুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
সংক্ষিপ্তভাবে বলা যায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও বিদেশে নেওয়ার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল ব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে চলমান রয়েছে।