1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

সরকারি প্রাথমিক শিক্ষায় সহকারী শিক্ষক কর্মবিরতি: বার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চিত

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৩ বার দেখা হয়েছে

 

জাতীয় ডেস্ক

সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবির পক্ষে টানা কর্মবিরতি পালন করায় প্রায় সাড়ে ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী সোমবার শুরু হতে যাওয়া বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে গুরুতর শঙ্কা তৈরি হয়েছে, কারণ শিক্ষকরা জানিয়েছেন—রোববার রাতের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত না এলে তারা পরীক্ষায় অংশ নেবেন না। এতে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের অচলাবস্থার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শিক্ষক নেতারা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে বেতন স্কেল উন্নীতকরণ, উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দেয়া হলেও কার্যকর অগ্রগতি না থাকায় তারা পুনরায় কর্মবিরতি শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের দাবি, সহকারী শিক্ষকরা শিক্ষাব্যবস্থার মূল ভরসা হলেও পদোন্নতি ও বেতন কাঠামোয় বৈষম্য বিদ্যমান, যা বহুদিন ধরেই শিক্ষক সমাজের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় তিন লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত। প্রধান শিক্ষকরা ইতোমধ্যে দশম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত হলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডে অবস্থান করছেন। শিক্ষক নেতাদের মতে, এই বৈষম্য দূর করা তাদের আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি। তারা বলেন, একই কর্মপরিবেশ ও দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও গ্রেডের পার্থক্য শিক্ষকদের মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যা প্রত্যক্ষভাবে শিক্ষার মানেও প্রভাব ফেলতে পারে।

গত ৮ থেকে ১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় তাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিলে শিক্ষকেরা কর্মস্থলে ফেরেন। তবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি না হওয়ায় পুনরায় কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। এর ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনায় সংশ্লিষ্টরা বিপাকে পড়েছেন, কারণ বছরের শেষ দিকে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে।

কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধে গত ২৭ নভেম্বর শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। তিনি শিক্ষক নেতাদের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন না করার আহ্বান জানান এবং সমস্যার সমাধানে আলোচনা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন। তবে শিক্ষক নেতারা জানান, দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় তারা কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিনের কাঠামোগত অসংগতির সমাধান ছাড়া কর্মসূচি থেকে সরে আসা সম্ভব নয়।

বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণায় অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। বছরের পড়াশোনার মূল্যায়ন ব্যাহত হলে শিক্ষার্থীদের শেখার ধারাবাহিকতা ভেঙে যেতে পারে বলে তারা মনে করছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত ক্ষতি পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে। বছরের শেষ পরীক্ষাটি বাতিল হলে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষেও প্রভাব পড়তে পারে।

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি প্রদান। শিক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এসব দাবি দীর্ঘদিনের এবং বহু শিক্ষক সংগঠন এ বিষয়ে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তৃতি ও মানোন্নয়নে সহকারী শিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তাদের বেতন কাঠামো ও পদোন্নতির প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ বহুদিন ধরেই রয়েছে।

বর্তমান অচলাবস্থা কাটাতে শিক্ষকরা দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত চান, আর সংশ্লিষ্ট প্রশাসন চেষ্টা করছে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান আনতে। তবে রোববার রাতের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সোমবারের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করা হলে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় আরও বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষা প্রশাসনের ওপরও অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত সমাধান না এলে শিক্ষাব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, যা আগামী শিক্ষাবর্ষের পরিকল্পনা ও কার্যক্রমকেও প্রভাবিত করতে পারে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com