নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেট, রবিবার (৩০ নভেম্বর): ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের আগে ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেশের সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক মানের লাইসেন্স প্রদান নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান সিলেটে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, “উপদেষ্টার নির্দেশনায় দেশব্যাপী এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক লাইসেন্স নিশ্চিত করতে ৬০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, দেশের সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৭৩ ভাগই মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের কারণে ঘটছে। তাই মানসম্পন্ন বিআরটিএ অনুমোদিত হেলমেট পরিধান করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিলেটের আলমপুর বিআরটিসি বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সকালেই মাস্টার ইন্সট্রাক্টর সার্টিফিকেট প্রাপ্তির লক্ষ্যে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহ সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএর পরিচালক রুবাইয়াৎ-ই-আশিক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআরটিএ, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক প্রকৌশলী ডালিম উদ্দিন।
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চালনার তত্ত্ব এবং ব্যবহারিক দিক সম্পর্কে প্রশিক্ষণ পাবেন। এতে সড়ক নিরাপত্তা, ট্রাফিক আইন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং প্রতিদিনের ড্রাইভিং অভ্যাস উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিআরটিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রশিক্ষণ সফলভাবে সম্পন্ন করার পরই লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটি শুধু নতুন ড্রাইভারদের জন্য নয়, প্রফেশনাল ড্রাইভারদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্যও কার্যকর। কর্মকর্তারা মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদিভাবে এটি সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে ড্রাইভিং শিক্ষার মান উন্নত করা সম্ভব হবে। সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, পরবর্তী পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করা হবে যাতে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নতুন ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা যায়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ৬০ ঘণ্টার এই বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ সিস্টেম কার্যকরভাবে চালু হলে সড়ক নিরাপত্তা মান উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হবে। এছাড়া, সড়ক দুর্ঘটনার হার কমানো এবং মোটরসাইকেল চালকসহ সকল ব্যবহারকারীর সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
বিআরটিএর এই উদ্যোগ সরকারের সড়ক নিরাপত্তা নীতি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে দেশের সড়ক ব্যবস্থাকে নিরাপদ ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্য ধাপসমূহে বাস্তবায়িত হবে।