জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা, সোমবার: বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি দেখা দিয়েছে। রবিবার তিনি হাসপাতালে অল্প নড়াচড়া করতে সক্ষম হয়েছেন এবং কথাবার্তায় সাড়া দিয়েছেন। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উন্নতির সত্ত্বেও তিনি এখনো ঝুঁকিমুক্ত নন।
দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। পরিবারের উদ্বেগ থাকলেও বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, দীর্ঘ ফ্লাইট, যাত্রাপথের শারীরিক চাপ এবং পরিবেশগত পরিবর্তন এই মুহূর্তে তাঁর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই দেশে অবস্থান রেখে অবস্থা স্থিতিশীল করার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার কিডনির ডায়ালাইসিস সম্পন্ন হয়েছে। তবে তিনি এখনও স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করতে পারছেন না। গুরুতর অসুস্থতার কারণে এক সপ্তাহ ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। লিভারের জটিলতা, কিডনির কর্মক্ষমতা হ্রাস, শরীরে পানি জমা এবং শ্বাসকষ্টসহ একাধিক শারীরিক সমস্যা একসাথে দেখা দেয়ার কারণে চিকিৎসা আরও জটিল হয়ে উঠেছে। অবস্থার তীব্রতা বিবেচনায় তাকে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শ্বাসকষ্ট, পানি জমা এবং কিডনির সমস্যাগুলোকে সমন্বিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এবং বিএনপির নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করছেন এবং তার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় কিছুটা স্থিতিশীল। চিকিৎসকদের লক্ষ্য এখন তাঁকে এমন পর্যায়ে আনা, যাতে তিনি বিমানযাত্রা সহ্য করতে পারেন, যদিও বর্তমানে সে পর্যায়ে পৌঁছানো হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সরাসরি যোগাযোগ রাখছেন এবং বিষয়টি মনিটর করছেন। এছাড়া, হাসপাতালের আশেপাশে ভীড় এড়াতে দলীয়ভাবে জনসাধারণকে ধৈর্য ধারণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, শারীরিক জটিলতা বিবেচনায় এখন মূল চ্যালেঞ্জ হলো ঝুঁকি কমিয়ে অবস্থাকে স্থিতিশীল রাখা এবং প্রয়োজনীয় মেডিকেল সাপোর্ট বজায় রাখা। শারীরিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হলে বিদেশে চিকিৎসার সম্ভাবনা পর্যালোচনা করা হতে পারে।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক এবং পরিবারিক পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রয়েছে, এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত আপডেট নিয়মিতভাবে নজরে রাখা হচ্ছে।