জাতীয় ডেস্ক
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়া’-র কারণে ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা সোমবার (১ ডিসেম্বর) তার প্রেস উইং-এর মাধ্যমে এক বার্তায় জানিয়েছেন, গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে প্রেরিত এক বার্তায় তিনি এই সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। বার্তায় প্রফেসর ইউনূস উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শ্রীলঙ্কায় আঘাত হানা আবহাওয়াজনিত দুর্যোগের মধ্যে এটি অন্যতম ভয়াবহ। তিনি বলেন, বিপর্যস্ত পরিবারগুলোর দুঃখ-কষ্টের সময় বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশের জনগণ শ্রীলঙ্কার বন্ধুসুলভ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রফেসর ইউনূস আশ্বাস দিয়েছেন যে, প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে বন্যা ব্যবস্থাপনা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, চিকিৎসা সহায়তা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত।
শ্রীলঙ্কার আবহাওয়াবিদ্যা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ‘ডিটওয়া’ আঘাত হানার ফলে ব্যাপকভাবে বাসস্থান ধ্বংস ও বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দেশটির দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে রেকর্ড বৃষ্টিপাত ও তীব্র বাতাসের কারণে হাজার হাজার মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তবে দুর্ঘটনায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মাপা এখনও চলমান।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সহায়তার মধ্যে রয়েছে বিশেষজ্ঞ দল প্রেরণ, জরুরি মেডিকেল কিট ও খাদ্যসামগ্রী পাঠানো, এবং প্রয়োজন অনুযায়ী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান। এটি দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও মানবিক সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব নিয়মিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্থানীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে বন্যা ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রমে অর্জিত দক্ষতা, শ্রীলঙ্কার জন্য উল্লেখযোগ্য সহায়তা হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রফেসর ইউনূসের এই বার্তা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও মানবিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনঃপ্রমাণ করে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সাহায্য কার্যক্রম ও শ্রীলঙ্কার পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা দ্রুত কার্যকর করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।