জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর: এভারকেয়ার হাসপাতালের নিকটস্থ দুটি উন্মুক্ত মাঠে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের পরীক্ষামূলক অবতরণ ও উড্ডয়ন পরিচালনা করা হবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নির্ধারিত নিরাপত্তা প্রটোকলের অংশ হিসেবে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে এই কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। বিজ্ঞপ্তিতে একই সঙ্গে জনগণকে যে কোনো ধরনের অপপ্রচার বা বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (১ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) হিসেবে ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স আইন, ২০২১-এর ধারা ২(ক) অনুযায়ী প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনের ফলে খালেদা জিয়া এসএসএফের অধীনে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুবিধা ভোগ করছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সংকটজনক প্রকৃতি বিবেচনা করে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই পরীক্ষামূলক হেলিকপ্টার উড্ডয়ন আয়োজন করা হচ্ছে। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নির্ধারিত উন্মুক্ত মাঠে হেলিকপ্টারের অবতরণ এবং উড্ডয়ন পরীক্ষা করা হবে, যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা যাচাই করা যায়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই ধরনের পরীক্ষা বিশেষ নিরাপত্তা প্রটোকলের একটি নিয়মিত অংশ। হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদানের সক্ষমতা যাচাই করা হয়। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী এই পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন।
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষার মাধ্যমে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের সময় যে কোনো ধরনের ত্রুটি বা ঝুঁকি চিহ্নিত করে তা দ্রুত সংশোধন করা সম্ভব হয়। এটি ভবিষ্যতে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এসএসএফ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের আশপাশের এলাকায় সাধারণ জনগণ এবং যানবাহন চলাচল পরীক্ষা চলাকালীন সীমিত করা হতে পারে। এছাড়া, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে।
এই কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে প্রশাসন জনগণকে সতর্ক করেছে যাতে বিভ্রান্তিকর তথ্য বা গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকা যায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষা মূলত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা যাচাই এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদানের সক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য আয়োজন করা হয়েছে।
পেশাদার নিরাপত্তা সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, এই ধরনের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন নিয়মিতভাবে পরিকল্পনা করা হয় এবং এটি কোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক উদ্দেশ্য নিয়ন্ত্রণে নয়। কার্যক্রমের মাধ্যমে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের সব নিরাপত্তা প্রটোকল বাস্তবায়নযোগ্য কিনা তা যাচাই করা হবে।
এভাবে, হাসপাতালে অবস্থানরত ভিভিআইপি ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে এই পরীক্ষামূলক হেলিকপ্টার উড্ডয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।