রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিবস ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষে আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
প্রচলিত বিশ্বাস মতে দ্বাপর যুগের শ্রাবণ মতান্তরে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেন। সমাজ থেকে অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন ও হানাহানি দূর করে মানুষে মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন। যেখানে অন্যায় অবিচার দেখেছেন সেখানেই শ্রীকৃষ্ণ আবির্ভূত হয়েছেন আপন মহিমায়। পবিত্র গীতায় বলা হয়েছে, অধর্ম ও দুর্জনের বিনাশ এবং ধর্ম ও সুজনের রক্ষায় তিনি যুগে যুগে পৃথিবীতে আগমন করেন। অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য কৃষ্ণ বৎসাসুর, অঘাসুর, বকাসুর প্রভৃতি অপশক্তিকে বিনাশ করেন। মথুরার অত্যাচারী রাজা কংসকে হত্যা করে মথুরায় শান্তি স্থাপন করেন। তিনি ছিলেন পরোপকারী, প্রেমিক ও সমাজসংস্কারক। কৃষ্ণের প্রেমিকরূপের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর বৃন্দাবন লীলায়, যা বৈষ্ণব সাহিত্যের মূল প্রেরণা।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এ দেশের সকল ধর্মের অনুসারীরা পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্র্দ্য বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি তাই আমাদের ঐতিহ্য। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ ঐতিহ্য অব্যাহত রাখতে হবে। সব ধর্মের মূল বাণী মানব কল্যাণ। তাই ধর্মকে ব্যবহার করে বা ধর্মের অপব্যাখ্যা করে কেউ যাতে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও মৈত্রীর বন্ধনকে আরো দৃঢ় করে তা জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি অর্জনে কাজে লাগানোর জন্য আমি দেশের সকল ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আহ্বান জানাই।
আমি শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি ‘জন্মাষ্টমী’ উৎসবের সাফল্য কামনা করি।
খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”