ধর্ম ডেস্ক
আগামী বছরের বিশ্ব ইজতেমা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
রোববার (২ নভেম্বর) সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ন-গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি উপস্থিত ছিলেন।
ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন দায়িত্বে ব্যস্ত থাকবে। ইজতেমার মতো বৃহৎ জনসমাগমের আয়োজনের জন্য প্রশাসনিক সহায়তা প্রয়োজন হয়, যা নির্বাচনের আগে দেওয়া সম্ভব নয়। এ কারণে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচনের পর।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগে এমন একটি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সমাবেশ আয়োজন করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ এতে বিদেশি নাগরিকসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন। সরকারের পক্ষ থেকে মনে করা হয়েছে, নির্বাচনকালীন সময়ে এমন আয়োজন নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করতে পারে। তাই জাতীয় স্বার্থে ইজতেমা পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষই সরকারের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছেন বলে জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষই তিন উপদেষ্টার উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন। সবাই একমত হয়েছেন যে নির্বাচনের পর সুবিধাজনক সময়ে ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করা হবে।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচন যদি ফেব্রুয়ারির প্রথম পনেরো দিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়, তবে রমজান মাসের আগে ইজতেমা আয়োজন করা সম্ভব নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে রমজানের পর সময় নির্ধারণ করা হবে। তারিখ নির্ধারণের আগে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আবারও আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
ইজতেমা একসঙ্গে নাকি আলাদাভাবে হবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী দুই পক্ষের ইজতেমা একত্রে আয়োজনের সুযোগ নেই। আলাদাভাবে আয়োজনের বিষয়টি উভয় পক্ষই মেনে নিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি পেছানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। “নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে,” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি পরিবর্তন হলে তা পর্যালোচনা করে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম সমাবেশ। প্রতিবছর লাখো মুসল্লি এতে অংশ নেন, যার মধ্যে দেশি-বিদেশি অনুসারীরাও থাকেন। নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনিক ব্যস্ততা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এবারের আয়োজন কিছুটা বিলম্বিত হলেও নির্বাচনের পর পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ইজতেমা আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।