1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে প্রস্তুত বিএনপি: মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: মন্তব্য ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়ার তিন দেশে ভয়াবহ বন্যায় মৃত প্রায় ১ হাজার ৮০০ রূপগঞ্জে কিশোরদের সাজানো ডাকাতির নাটক, তিনজন গ্রেপ্তার দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব পাকিস্তানের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রাজউক চেয়ারম্যান ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ব্যাপক অংশগ্রহণের আশা সালাহউদ্দিন আহমদের প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ স্থগিত, রবিবার থেকে সব বার্ষিক পরীক্ষা শুরু রাজশাহীতে এনসিপি নেতা সারজিস আলমকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার দাবি নতুন প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান ভিপি সাদিক কায়েমের

জেনোসাইড প্রসঙ্গ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনা ও উদ্বেগ

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১১ বার দেখা হয়েছে

রাজনীতি ডেস্ক

রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন বক্তব্য ও পাল্টা-বক্তব্যের মধ্যে দেশে নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কিত সাম্প্রতিক বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, জামায়াতে ইসলামীর আমীরের একটি মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘গণতন্ত্রে উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচন এবং গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হলে গণহত্যা বা জেনোসাইডের আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। তার মতে, এ ধরনের বক্তব্য জাতিকে অযথা আতঙ্কিত করতে পারে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে ভুল বার্তা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। তিনি প্রশ্ন তোলেন, একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে থেকে রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে এমন মন্তব্য কীভাবে জনমানসে আস্থাহীনতা তৈরি করতে পারে।

সেমিনারে রিজভী আরও বলেন, জেনোসাইড শব্দটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত সংবেদনশীল, যা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তিনি দাবি করেন যে, দেশের জনগণ অতীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে উচ্চমূল্য দিয়েছে। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে জেনোসাইডের আশঙ্কা প্রকাশ করা বাস্তবতা-বিচ্যুত ও অযৌক্তিক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি জানান, নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে কি হবে না, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলমান। অনেক রাজনৈতিক দলের মতে, আলাদা দিনে গণভোট আয়োজন করলে ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের স্বাভাবিক চর্চার অংশ হিসেবে এ ধরনের বিতর্ক বা আলোচনা হওয়া স্বাভাবিক, তবে তা আতঙ্ক বা সংঘাত সৃষ্টি করে এমন বক্তব্যের মাধ্যমে প্রভাবিত হওয়া উচিত নয়।

গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশ এখনো পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। স্বাধীনতার পর বহুবার গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত হওয়ার কারণে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বর্তমান সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা বা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা তৈরি হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংকটে পড়তে পারে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগণের ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা জরুরি। তার বক্তব্য অনুযায়ী, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জনগণের আস্থা অর্জন ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রিজভী মনে করেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক রাখতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য বিকৃত করার প্রসঙ্গেও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাজনীতিকদের বক্তব্য বিকৃত করার ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক আচরণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তার দাবি, প্রযুক্তিগত অপব্যবহার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হেয় করা বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সেমিনারে আরও আলোচিত হয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্কের বিষয়টি। জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক দলের নির্দেশে পরিচালিত হয়— এমন বক্তব্য গণতন্ত্রের মৌলিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তার মতে, এ ধরনের বক্তব্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও শাসনব্যবস্থার স্বাধীনতা প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা অপরিহার্য।

সেমিনারে বিএনপির আরও কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার বিষয়ে মতামত দেন। অংশগ্রহণকারীরা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুস্থ বিতর্ক, সহনশীলতা ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকর করা সম্ভব। সমাবেশে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।

সেমিনারের বক্তারা সামগ্রিকভাবে মত দেন যে, আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে যে আলোচনা চলছে তা শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত এবং যেকোনো বক্তব্য কিংবা কর্মকাণ্ড যা জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বা বিভ্রান্তি ছড়ায়, তা এড়িয়ে চলাই গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য শ্রেয়।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com