রাজনীতি ডেস্ক
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান প্রথমবারের মতো দলের একটি সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বিএনপির ইউরোপীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রবাসী ভোটারদের ভোট কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হন এবং দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, এবং দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা: মওদুদ হোসাইন আলমগীর পাভেল উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, জাইমা রহমানের এই উপস্থিতি দলের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সভায় বিতর্কিত বিষয়বস্তু বা বিশ্লেষণ বাদ দিয়ে দলীয় কার্যক্রম, প্রবাসী ভোটারদের অংশগ্রহণ এবং ভোট প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিওতে দেখা যায়, জাইমা রহমান সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এতো কষ্ট করে সবাই এখানে এসেছেন। আপনাদের চিন্তা-ভাবনা ও কাজের অগ্রগতি আমরা মূল্যায়ন করছি। আমাদের লক্ষ্য সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা।” সভায় অংশগ্রহণকারীরা নোট গ্রহণ করে কার্যক্রমের রূপরেখা ও সময়সূচি চূড়ান্ত করেন।
জাইমা রহমানের রাজনৈতিক পদচারণা নতুন নয়; ছোটবেলায়ই তাকে দাদী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ও রাজনৈতিক আয়োজনের সময় দেখা যেত। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের সভায় অংশগ্রহণ করা এবারের এই সভায় প্রথম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্যারিস্টারি সম্পন্ন করার পর দলের আনুষ্ঠানিক সভায় তার অংশগ্রহণ ভবিষ্যতে বিএনপির নেতৃত্ব কাঠামোতে সক্রিয় ভূমিকার ইঙ্গিত হতে পারে।
জাইমা রহমান লন্ডনের লিংকন্স ইন থেকে ব্যার-অ্যাট-ল সম্পন্ন করেছেন। এর আগে কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্যারিস্টারি পাশ করার পর থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তার প্রতি আগ্রহ ও প্রত্যাশা বৃদ্ধি পায়। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, তার আন্তর্জাতিক শিক্ষা ও আইনগত প্রেক্ষাপট দলের সাংগঠনিক শক্তি এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
গত মাসে বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণে সময় এবং পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রাজনৈতিক ময়দানে শোনা যায়, তার দেশের সফরের দেরির কারণে তার মেয়ে জাইমা রহমানকে রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সক্রিয় করা হচ্ছে। তবে এবার সভায় আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক প্রভাব ও দলের সঙ্গে সংযুক্তি আরও দৃঢ় হবে বলে দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাইমা রহমানের এই পদক্ষেপ দেশের রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে বিএনপির সংযোগ শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তার সক্রিয় অংশগ্রহণ দলীয় কার্যক্রমকে আরও সমন্বিত ও কার্যকরভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।