ফার্মগেট এলাকার কাছে মেট্রোরেল লাইনের ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার পর সাড়ে ২৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আবারও মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ সকাল ১১টা থেকে পুরো রুটে মেট্রোরেল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
গতকাল, রবিবার (২৭ অক্টোবর), মেট্রোরেলের ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ওই সময় এক পথচারী নিহত এবং আরও দুজন আহত হন। এই দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেট্রোরেল সেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল।
ডিএমটিসিএলের উপ-প্রকল্প পরিচালক (গণসংযোগ) মো. আহসান উল্লাহ শরিফী ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, “আজ সকাল ১১টা থেকে পুরো রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “গতকাল বিকেল ৩টার দিকে আগারগাঁও-উত্তরা সেকশনে এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মতিঝিল-শাহবাগ সেকশনে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও শাহবাগ-আগারগাঁও সেকশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।”
গতকাল দুপুরে মেট্রোরেলের ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাডটি পড়ে গিয়ে একজন পথচারী নিহত হন এবং অন্য দুজন আহত হন। দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রাখে এবং ঘটনার কারণ অনুসন্ধান শুরু করে।
দুর্ঘটনার পর, সকাল থেকে ৪৩৩ নম্বর পিলারে বিয়ারিং প্যাড বসানোর কাজ শুরু করা হয়, যা প্রায় সাড়ে ২৩ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে পুরো রুটে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু করা হয়।
এ দুর্ঘটনা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়ন করার কথা বলেছেন। বিশেষত, এই ধরনের বিয়ারিং প্যাডের পতন এবং এর ফলে মানবিক ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। দুর্ঘটনার পরও কিছু ঝুঁকি নিয়ে মেট্রোরেলের ট্রেন চালানো হয়েছে, যা বিশেষজ্ঞদের জন্য নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে। তারা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে মেট্রোরেল নকশা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনরায় মূল্যায়ন করা হবে।
এদিকে, দুর্ঘটনায় নিহত আবুল কালামের স্ত্রীও তার স্বামীকে হারানোর পর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন, যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা এবং মানবিক দিক তুলে ধরে।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাংলাদেশে একটি বড় অবকাঠামোগত প্রকল্প এবং রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে এই ধরনের দুর্ঘটনা জনমনে নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি যথাযথ পরিদর্শন ও সতর্কতা নিশ্চিত করা হলে এই ধরনের ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আরও সজাগ থাকার এবং নিরাপত্তা মান বজায় রাখার অঙ্গীকার করেছে।