ফার্মগেট এলাকার কাছে মেট্রোরেল লাইনের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার পর সাড়ে ২৩ ঘণ্টা পর সোমবার (২৭ অক্টোবর) বেলা ১১টায় পুরো রুটে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বিজয় সরণি-ফার্মগেট-বিজয় সরণি অংশে ট্রেন ধীরগতিতে চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে মেট্রোরেলের ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড পড়ে গিয়ে একজন পথচারী নিহত এবং দুজন আহত হন। দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার কারণে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে বিকেল ৩টার দিকে আগারগাঁও-উত্তরা সেকশনে এবং সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মতিঝিল-শাহবাগ সেকশনে মেট্রো চলাচল শুরু হয়, তবে শাহবাগ-আগারগাঁও সেকশনে মেট্রো চলাচল বন্ধ ছিল।
আজকের দিনে, পুরো রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও, বিজয় সরণি থেকে ফার্মগেট এবং ফের বিজয় সরণি পর্যন্ত সেকশনে ট্রেনের গতি ধীর। যাত্রী গোলাম রাব্বি ঢাকা পোস্টকে বলেন, “মিরপুর থেকে ট্রেন ভালো গতিতেই আগারগাঁও পর্যন্ত এসেছিল, কিন্তু এরপর থেকে গতি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। বিজয় সরণি পার হওয়ার পর মনে হয়েছে, ট্রেন প্রায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে চলছিল।”
এ বিষয়ে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি প্রদান করেনি, তবে এমআরটি লাইন-৬ এর দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছেন যে, বিজয় সরণি-ফার্মগেট-বিজয় সরণি অংশে ট্রেন গতি কমিয়ে চলাচল করছে, যা মূলত নিরাপত্তার কারণে। অন্যথায়, বাকি সেকশনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে থাকছে।
এদিকে, মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যে ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা ভবিষ্যতে মেট্রোরেল চলাচলে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, এবং পদক্ষেপ নেওয়া হবে যাতে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
এ বিষয়ে মেট্রোরেল এবং অন্যান্য ফ্লাইওভারের বিয়ারিং প্যাডের মান নির্ধারণে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। এতে মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাডের মান যাচাই করার দাবি জানানো হয়েছে, যাতে নিরাপত্তা এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা যায়।
এখন পর্যন্ত, মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনা সম্পর্কিত বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি, তবে তারা দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।