বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে কমনওয়েলথ ইলেক্টোরাল সাপোর্ট সেকশনের (ইএসএস) প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ তথ্য জানান।
এ সময় উপদেষ্টা জানান, সরকার নির্বাচন পরিচালনায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোর মাধ্যমে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে কাজ করবে। তিনি বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবে, এর পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর ৮০ হাজার সদস্য নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী মহড়া ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া, প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা (যথাসম্ভব) এবং বডি ওর্ন ক্যামেরা বসানো হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সুষ্ঠু যোগাযোগের জন্য পুলিশ সদর দপ্তর ও জেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। নির্বাচনের সময় গণমাধ্যমকে অবাধভাবে সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ দেওয়া হবে এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলকে অনুমতি দেওয়া হবে।
উপদেষ্টা জানান, নির্বাচনকালীন শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য মোবাইল টিম এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ করা হবে। নির্বাচন পরিচালনায় অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যা নির্বাচনের সময় কাজে লাগানো হবে।
কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের দীর্ঘকালীন কমনওয়েলথ সদস্যপদ রয়েছে এবং বাংলাদেশ, কমনওয়েলথের নির্বাচন পর্যবেক্ষক গ্রুপকে আমন্ত্রণ জানালে তারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে প্রস্তুত। তিনি আরও জানান, কমনওয়েলথের সহায়তা পেলে সিসিটিভি, বডি ওর্ন ক্যামেরা এবং অন্যান্য নির্বাচনী সরঞ্জাম সরবরাহ করা যেতে পারে।
নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে, নতুন নিয়োগ সম্পর্কে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য ১০ হাজার ২৬৪ জন নতুন পুলিশ, ২ হাজার ১৪৫ জন আনসার ও ভিডিপি, ৫ হাজার ৫১৩ জন বিজিবি এবং ৬৩৪ জন কোস্টগার্ড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, উপদেষ্টা বলেন, আইন মন্ত্রণালয় চাইলে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা সম্ভব। তবে, তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি ইতোমধ্যেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
শেষে, উপদেষ্টা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ অবাধ, নির্ভয়ে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।