জাতীয় ডেস্ক
দুর্নীতি, অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগে কুমিল্লা, রাঙামাটি ও ঝিনাইদহ জেলার তিনটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দুদক জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কুমিল্লা জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় বেসরকারি রাজস্ব বাজেট থেকে মেরামত ও সংস্কার খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের অনিয়মিত উত্তোলনের অভিযোগে একটি অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযোগে বলা হয়, তিতাস উপজেলার দুধঘাটা নূরে মোহাম্মদী (সঃ) মাদ্রাসার বাউন্ডারি ওয়াল ও গেট নির্মাণের জন্য ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হলেও বাস্তবে কোনো কাজ সম্পন্ন হয়নি।
অভিযানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দলের উপস্থিতিতে স্থান পরিদর্শন করে দেখা যায়, কাজ সম্পন্ন না করেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিল উত্তোলন করেছে। দুদকের টিম ঘটনাস্থল থেকে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ও রেকর্ড সংগ্রহ করে এবং প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করে।
রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভূষণছড়া এবং কলাবুনিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবায় অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগে দ্বিতীয় একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দেখা যায়, বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দায়িত্বস্থলে অনুপস্থিত এবং প্রতিষ্ঠানে সামগ্রিকভাবে বিশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করছে।
এছাড়া কলাবুনিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সম্পূর্ণ বন্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখানকার ফার্মাসিস্ট ও মেডিকেল ল্যাব টেকনোলজিস্ট (এমএলএস) নিয়মিত দায়িত্বে থাকেন না। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. ফারজানা ইয়াসমিনের নাম বরাদ্দপত্রে থাকলেও তিনি সাইটে উপস্থিত ছিলেন না। জেলা সিভিল সার্জনও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি বলে দুদক জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ঝিনাইদহ পৌরসভায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন একটি প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে আরেকটি অভিযান পরিচালনা করে দুদক টিম। তদন্তে জানা যায়, প্রকল্পটির টেন্ডার প্রক্রিয়া তখনও চলমান এবং কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়নি।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প-সংক্রান্ত নথিপত্র, টেন্ডার ডকুমেন্ট ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ করে।
দুদক জানায়, তিনটি অভিযানে সংগৃহীত নথি ও প্রমাণাদি পর্যালোচনা শেষে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানি রোধে নিয়মিতভাবে এ ধরনের এনফোর্সমেন্ট অভিযান অব্যাহত থাকবে। কমিশন মনে করে, এসব অভিযান প্রশাসনিক জবাবদিহিতা বাড়াতে ও জনসেবা খাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।